সারা দেশের মাদ্রাসাসমূহ

জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসা

February 23 2021, 07:06

Manual2 Ad Code

জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা প্রচার-প্রসারে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটির অনেক ভূমিকা রয়েছে। এখান থেকে জ্ঞানার্জন করছে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী । এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ি থানার কুতুবখালীতে অবস্থিত।

 

প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: 

ঢাকার অন্তর্গত দক্ষিণ যাত্রাবাড়ি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকায় ১৩৮৯ হিজরি মোতাবেক ১৯৬৯ সনের শুরুর দিকে ৩ শতক জায়গার উপর যাত্রাবাড়ি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন হাফেজ আব্দুল কুদ্দুস সাহেবের তত্ত্বাবধানে মাদরাসার কাৰ্যক্ৰম চালু হত।

১৯৭০ সনে হাফিজুল হাদিস আল্লামা আব্দুল্লাহ দরখাস্তি রহ. মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে পুরো ঢাকা ঘুরে অবশেষে যাত্রাবাড়ি পুকুরপাড়ের ছোট্ট কামরায় রাতনিমগ্ন ইবাদতে ইলমে ওহীর সুঘ্ৰাণ পান। যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সব মাদরাসা বন্ধ থাকে। এরপর ১৯৭৪ সনে সর্বপ্রথম যাত্রাবাড়ি মাদ্রাসা চালু হয়।

আল্লামা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহ রহ. কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার শাইখুল হাদিস ছিলেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহের এক মাদরাসায় কিছুদিন অবস্থান করে যাত্রাবাড়ি জামিয়ায় চলে আসেন। এবং মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত ইহতিমামের দায়িত্ব পালন করেন। পরবৰ্তীতে শায়খ তাজাম্মুল আলী রহ. কে এনে মুহতামিম নিযুক্ত করা হয়।

Manual4 Ad Code

১৯৭৪ সনে আল্লামা মাহমুদুল হাসান সাহেব পাকিস্তান থেকে সরাসরি যাত্রাবাড়ি জামিয়ায় চলে আসেন। ১৯৭৫ সন পর্যন্ত আল্লামা মাহমূদুল হাসান অস্থায়ী নাজেমে তালিমাত ছিলেন। এরপর ১৯৭৬ সনে কাজী সাহেব রহ. সহ আরো অনেক শিক্ষকবৃন্দ চলে যান। তখন মাওলানা মহিউদ্দিন খান সাহেব রহ. ও পীর দুধু মিয়া সহ আরো ৫২জন সদস্যের মাধ্যমে গঠিত ছিল জামিয়ার কমিটি। খতিব ওবায়দুল হক সাহেব রহ. ছিলেন সভাপতি। এলাকার চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ সাহেব ছিলেন সেক্রেটারি। শায়খ তাজাম্মুল আলী সাহেব ছিলেন মুহতামিম। কাজী সাহেব রহ. চলে যাওয়ার পর শায়খ তাজাম্মুল আলী রহ. জামিয়ায় দুই বছর ছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর, মতান্তরে তিনি থাকতেই আল্লামা মাহমূদুল হাসান সাহেব ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম হন।

Manual8 Ad Code

১৯৮০ সনে আল্লামা মাহমূদুল হাসান জামিয়ার ইহতিমামের দায়িত্ব পূৰ্ণভাবে গ্ৰহণ করেন। তিনি দায়িত্ব হাতে নেয়ার পর থেকে জামিয়ার চিত্ৰ বদলাতে থাকে। সৰ্বদিক থেকে হতে থাকে জামিয়ার উন্নতি। সমৃদ্ধ হতে থাকে জামিয়ার প্ৰতিটি শাখা। অল্পদিনেই তার সুদক্ষ, নিপুণ পরিচালনায় জামিয়া হয়ে ওঠে বিশ্বের অন্যতম প্ৰতিষ্ঠান। ১৯৮৩ সনে দারুল হাদিসের ছাত্ৰ ছিলো মাত্ৰ ৬জন, সে জামিয়ায় বৰ্তমানে দারুল হাদীসে অধ্যয়ন করছেন প্ৰায় দুই হাজার তালিবুল ইলম, যা বিশ্বে হাদিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম দরসগাহ।

এই জামিয়াকে তিলে তিলে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। জামিয়ার দালানগুলো নিৰ্মাণের সময় নিজ হাতে কাজ করেছেন, সাথে ছিলেন তার প্ৰিয় শাগরেদরা। টাকার অভাবে জামিয়ার বাজার-খর্চা রিকশায় করে নয়, নিজের কাঁধে বোঝাই করে আনতেন।

Manual1 Ad Code

জামিয়ার শিক্ষাধারা

জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া গতানুগতিক কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এ জামিয়া সাজিয়েছে তার পাঠপদ্ধতি ও শিক্ষা সিলেবাস। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে দ্বীনি শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদীস(মাস্টার্স) পর্যন্ত শ্রেণি ভিত্তিক পাঠের সুব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি গবেষণামূলক উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের নিমিত্তে বেশ কয়েকটি অনুষদ বিদ্যমান। দাওরায়ে হাদীস সমাপন করার পর মেধাবী তরুণ আলেমদের সেখানে অধ্যয়ন ও গবেষণার বিপুল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেন জাতিকে বহুমুখী যোগ্যতাসম্পন্ন বিচক্ষণ আলেম উপহার দেওয়া যায়। সুবিন্যস্ত সিলেবাসের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে মৌলিকভাবে পবিত্র কুরআন, তাফসীর, হাদীস, ফিকহ, নাহব-সরফ, বৈষয়িক পর্যায়ে আরবি সাহিত্য, প্রয়োজনীয় বাংলা,ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, পৌরনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি সমূদয় বিষয় শিক্ষা দেওয়া হয়।

Manual6 Ad Code

Spread the love