সারা দেশের মাদ্রাসাসমূহ

মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ.

July 04 2023, 10:08

নাম :- মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ.

জন্ম / জন্মস্থান :- খুরুশকুল, কক্সবাজার।

শৈশব কাল :- মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ. ১৯৪৫ ইংরেজীতে কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলাধীন খুরুশকুল ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি মরহুম আবদুল হালিম ও মরহুমা দিলদার বেগমের মেজ পুত্র।

শিক্ষা জীবন :- অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ. ছাত্রজীবনে প্রথমে কক্সবাজারের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলুম চাকমারকুলে কিছুকাল অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষায়তন জামেয়া আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা অর্জন করেন। সেখানে তিনি তাফসীর, হাদিস, আরবী ব্যাকরণ ও তর্কশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিরল প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন। তিনি কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে দাওরায়ে হাদিস ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে হাদিস বিভাগে কামিল ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর সুযোগ্য শিক্ষকদের মধ্যে জামিয়া ইসলামিয়া হাটহাজারীর মরহুম মুহতামিম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফি রহ. , আল্লামা হামেদ সাহেব রহ., শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুল কাইয়ুম রহ., শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুল আজিজ রহ., চাকমারকুল মাদ্রসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আখতার কামাল রহ., মরহুম পরিচালক মাওলানা সুলাইমান রহ. ও মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ শফি রহ. অন্যতম।

কর্ম জীবন :- শিক্ষকতা ও শিক্ষার প্রসার:
বহুমূখী প্রতিভাসম্পন্ন এই আলেমেদ্বীন কক্সবাজার হাশেমিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় বহুকাল যাবৎ দ্বীনি শিক্ষার মহৎ খেদমত আঞ্জাম দেন। কওমী ঘরনার আলেম হয়েও তিনি শিক্ষা বিস্তারের নিমিত্তে আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে বড় মনের পরিচয় দেন। এছাড়াও তিনি দ্বীনি শিক্ষার বিস্তারের ব্রত নিয়ে নিজ এলাকায় মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা নামে একটি দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। আমৃত্যু তিনি ছিলেন এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।

সাহিত্য-সাংবাদিকতা:
মুসলিম মিল্লাতের বিরুদ্ধে মিডিয়া আগ্রাসন মোকাবিলায় সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ও মননশীল সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্র তৈরির নিমিত্তে তিনি “সাপ্তাহিক নাজাত” নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনিই ছিলেন এই পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। তাঁর স্বপ্ন ছিল অত্যাধুনিক প্রিন্টিং প্রেসসহ একটি উঁচুমানের প্রকশনা সংস্থা গড়ে তোলা। এ উদ্দেশ্যে তিনি আরব আমিরাত, সৌদিআরব, বাহরাইন, ভারত ও পাকিস্তান সফর করে প্রবাসী মুসলমানদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন। কিন্তু আকস্মিকভাবে অসূস্থ হয়ে পড়ায় তাঁর এই কাঙ্ক্ষিত উদ্যোগ আর বাস্তবায়িত হয়নি।

আধ্যাত্মিকতা:
আধ্যাত্মিক জগতের অন্যতম রাহ্বার আল্লামা আতহার আলী রহ. এর এই সুযোগ্য উত্তরসূরী রাজনীতি ও শিক্ষকতার শত ব্যস্ততার মাঝেও আল্লাহকে স্মরণ করতে ভুলে যেতেন না। তিনি নামায,রোজা,কোরআন তেলাওয়াত,যিকির-আযকার প্রভৃতি ইবাদত-বন্দেগী পালনে সচেষ্ট ছিলেন। দিনের বেলায় ইসলামী আন্দোলন ও জাতির কল্যাণে বিভিন্ন তৎপরতায় অংশগ্রহণ এবং রাত্রে মহান আল্লাহ তা’আলার যিকির-আযকার ও তাহাজ্জুদের নামায আদায় ছিল তাঁর অনন্য বৈশিষ্ট্য। তিনি বহুবার পবিত্র হজ্ব ও ওমরা পালন করেন।
গুণাবলী:
রাজনৈতিক নেতা হয়েও আড়াম্বরপূর্ণ জীবন যাপনের পরিবর্তে সাদাসিদে সুন্নাতি পোষাক পরিধান ও সহজ-সরল জীবন যাপনে তিনি সাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। কোন প্রকার পার্থিব মোহ ও অহঙ্কার তাঁকে আচ্ছন্ন করতে পারেনি। সদা হাস্যোজ্জ্বল, নম্র, ভদ্র স্বভাবের অধিকারী মাওলানা আরমান রহ. আন্তরিকতা দিয়ে সহজে নেতাকর্মীদের মন জয় করতে পারতেন। তিনি নিজের অভাব কখনও নেতাকর্মীদের কাছে প্রকাশ করতেন না ; বরং নিজে না খেয়ে তাদেরকে খাওয়াতেন। খানা খাওয়ার সময় হঠাৎ কোন কর্মী এসে পৌছলে এক প্লেট ভাতকে ভাগ করে তিনি নিজেও খেতেন, কর্মীকেও খাওয়াতেন। তিনি তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে কখনো কোনরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন করতেন না। কর্মীদের যে কোন সমস্যায় তিনি এগিয়ে আসতেন।

মূল্যায়ন:
সর্বোপরী মাওলানা আরমান রহ. এর বর্ণাঢ্য জীবনে ইসলামী নেতৃত্বের প্রয়োজনীয় গুণাবলীর সফল সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়। তিনি ছিলেন একাধারে নববী আদর্শ ও সাহাবা জীবনের সার্থক অনুসারী, বিজ্ঞ আলেমেদ্বীন, দূরদর্শী রাজনীতিবিদ, ইসলামের দ্বীপ্তিময় নক্ষত্র, দ্বীনি আন্দোলনের নির্ভীক সাহসী যোদ্ধা ও নিঃস্বার্থ সমাজসেবক। তাঁর মত আত্মত্যাগী ব্যক্তিত্ব বর্তমান সমাজের বিরল। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে উচ্চ রক্তচাপের প্রতিক্রিয়ায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়লে তাঁর বাকশক্তি রহিত হয়ে যায়। এর পর থেকে কখনও তাঁকে আর জ্বালাময়ী ভাষণ দিতে দেখা যায়নি, অংশগ্রহণ করতে পারেননি বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্গনের কোন কর্মসূচিতে। অসূস্থতার আগ পর্যন্ত তিনি নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা সভাপতির দায়িত্বও আঞ্জাম দেন।

অবদান :- ছাত্রজীবন থেকে তিনি ছিলেন কুরআন-সুন্নাহ্\’র আলোকে কুসংস্কারমুক্ত সুস্থধারার সমাজ বিনির্মাণে নিবেদিতপ্রাণ। নব্য জাহেলিয়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ছাত্রসমাজকে ইসলামী আদর্শের অনুসারী হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায়ে উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়েকেরামের তত্ত্বাবধানে ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘ইসলামী ছাত্রসমাজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা আহবায়কের দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পিত হলে তিনি হাঁটি হাঁটি পা পা করে এ সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে নজিরবিহীন ঝুঁকি ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ছাত্রজীবন শেষে উপমহাদেশে ইসলামী আন্দোলনের পথিকৃৎ আল্লামা আতহার আলী রহ., খতীবে আজম আল্লামা ছিদ্দিক আহমদ রহ., আল্লামা সৈয়দ মুসলেহ্ উদ্দিন রহ. এর রাজনৈতিক চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে তিনি ঐতিহ্যবাহী নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগদান করেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে শাণিত করার লক্ষ্যে নেজামে ইসলাম পার্টির সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করার জন্য তাঁর সার্বক্ষণিক প্রয়াস ছিল প্রশংসনীয়। তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, মহাসচিব এবং ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কৃতিত্বের নজীর পেশ করেন। তিনি ছিলেন সর্বস্তরে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় অগ্রসেনানী। অন্যায়ের প্রতিরোধে আপসহীন, নির্ভীক সিপাহসালার। দূর্নীতি ও দুঃশাসনসহ যাবতীয় অপকর্মের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদা জনতার মিছিলে বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেন।রাজধানীর মুক্তাঙ্গন, পল্টন ময়দান, বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান ও কক্সবাজার পাবলিক হল ময়দানে তার জ্বালাময়ী ভাষণ জনতার হৃদয়কে দারুণভাবে আকর্ষণ করত। সৌদি আরব হতে মার্কিন এবং কুয়েত থেকে ইরাকী সৈন্য প্রত্যাহারের দাবীতে ১৯৯০ ইংরেজী সনে ঢাকায় মার্কিন দুতাবাসের সামনে আয়োজিত নেজামে ইসলাম পার্টির এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি ১৮ জন নেতা-কর্মীসহ গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেছিলেন।

তিনি বিশ্বাস করতেন ইসলামী নেজাম প্রতিষ্ঠার মধ্যেই ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি নিহিত। তাই চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে বিলাসী জীবন যাপনের পরিবর্তে তিনি ইসলামী নেজাম প্রতিষ্ঠার কঠিন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ও দৈন্যতা ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। তবে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি দ্বীনি ময়দান থেকে এক মূহুর্তের জন্যও বিচ্যুত হননি। পৈত্রিক সহায় সম্পত্তি পর্যন্ত বিক্রি করে তিনি ইসলামী আন্দোলন ও জনহিতকর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসলামের দাওয়াত নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়াতেন। ফলে অনেক সময় তিনি বাড়ি ঘরের খবরও নিতে পারতেন না। এভাবে মরহুম মাওলানা আরমান সাহেব ইসলাম ও জাতির কল্যাণে যে আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তা ইতিহাসের পাতায় চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

বাতিল-অপসংস্কৃতির প্রতিরোধ:
জীবনের অন্তিমকালে অসুস্থ হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ. ছিলেন বাতিলের প্রতিরোধ ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন লড়াকু সৈনিক। তাঁর বিশ্বাস ছিল সংস্কৃতির নামে অশ্লীল নৃত্য, নগ্ন ছবি প্রদর্শন, গানের আসর ও নাটক ইত্যাদি অনৈতিক তৎপরতার কারণে জাতির ভবিষ্যত প্রজন্ম ছাত্র ও যুবসমাজ চারিত্রিক অধপতনের শিকার হয় এবং সমাজে সৃষ্টি হয় চরম নৈতিক অবক্ষয়। ফলে এব্যাপারে তিনি ছিলেন একেবারেই আপোষহীন। যে কোন বাতিল ও অপসংস্কৃতির প্রতিরোধে আলেম-ওলামা ও সর্বস্তরের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে তিনি রাজপথে নেমে আসতেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ-উৎসবের নামে অশ্লীলতা ও ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড নির্মূলে মাওলানা আরমান সাহেব আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ১৯৮০ সালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আনন্দ মেলার নামে অপসংস্কৃতির এক বিশাল আয়োজনকে তিনি ১০/১৫ হাজার তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে পণ্ড করে দেন। এব্যাপারে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলেও তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হননি। ১৯৮৯ সালে কুখ্যাত লেখক সালমান রুশদী কর্তৃক পবিত্র কোরআন মজিদ, মহানবী স. ,সাহাবায়েকেরাম ও রাসুল স. এর সহধর্মীনিগণের ব্যাপারে কুটুক্তির প্রতিবাদে কক্সবাজার পাবলিক হল মাঠে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজনের মাধ্যমে মাওলানা আরমান সাহেব তেজোদীপ্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সমাজসেবা:
মরহুম মাওলানা আরমান সাহেব শুধু রাজনৈতিক নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত সমাজ দরদী ব্যক্তিত্ব। তিনি সুখে দুঃখে সমাজের অসহায়- দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতেন। ১৯৯১ সালে সর্বগ্রাসী ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহের পুনর্বাসন ও বিধ্বস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনঃনির্মাণের দাবীতে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। একই বছর ১৫ সেপ্টেম্বর চাকমারকুল মাদ্রাসার মরহুম পরিচালক মাওলানা সুলাইমান রহ. সহ বিশিষ্ট ওলামায়েকেরামের এক প্রতিনিধিদল নিয়ে তিনি এব্যাপারে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা এবং এলাকার রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণসহ মানবকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে মরহুম মাওলানা নুরুল হক আরমান রহ. এর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে।

মৃত্যু তারিখ :- ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী, মঙ্গলবার তাহাজ্জুদের সময় ৫৭ বছর বয়সে এই মনিষী ইন্তেকাল করেন-(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তথ্য দানকারীর নাম :- নাঈমুল হক

তথ্য দানকারীর মোবাইল :- 01868238284, naimamorbd@gmail.com

Spread the love